মিজানুর রহমান মিজান
১/বাড়িতে নিজের কাজ নিজেই করুনঃ
আপনার স্ত্রী বাড়িতে সন্তান সন্ততি লালন পালন, সাংসারিক কাজ ইত্যাদি ঝামেলায় সব সময় ব্যস্ত থাকেন। ফলে অনেক সময় আপনাকে সময় দিতে পারেন না। তাতে আপনি তার উপর রাগ না করে আপনার ছোট খাট কাজ আপনি নিজেই সেরে ফেলতে পারেন।
স্ত্রীকে যথাযথ সম্মান দেওয়া ও পারিবারিক কাজে তার পরামর্শ নেওয়া
২/স্ত্রীকে
আপনার পরিবারের সব ছোট বড় সিদ্ধান্তে আপনার স্ত্রীর মতামত গ্রহণ করুন। তাকে সম্মান দেখান, দেখবেন সেও আপনাকে অনেক সম্মান করবে। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের নানা সমস্যা তাঁর স্ত্রীদের কাছে জানাতেন। তাঁরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পরামর্শ দিতেন। যেমন: হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাফিরদের সাথে চুক্তি শেষ করে সাহাবাদেরকে হাদির পশু যবাই করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু তাঁরা রাসূলের হিকমত বুঝতে না পেরে যবাই করতে বিলম্ব করেন, এতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাগান্বিত হয়ে উম্মে সালামাহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহার নিকট প্রবেশ ঘটনা জানান। তিনি এ সমস্যা সমাধানে সুন্দর মতামত দেন।
আপনি বাইরের কাজ করে এসে দেখলেন আপনার স্ত্রীর রান্না বা অন্যান্য কাজে বিলম্ব হচ্ছে, এতে আপনি ভ্রূকুটি না করে তার কাজে সহযোগিতা করুন, দেখবেন আপনাকে সে কত ভালোবাসে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের ঘরের কাজে সহযোগিতা করতেন
৪/ স্ত্রী ও পরিবার পরিজনের সাথে সুন্দর আচরণ
করুন , তাদের সাথে কোমল ভাষায় কথা বলুন।
৫/আপনি আপনার স্ত্রীর সাথে সবসময় ভালোবাসার কথা বলবেন, তাকে রোমান্টিকতা দিয়ে ভরপুর করে রাখুন। আপনার স্ত্রী হয়ত ঘুরতে পছন্দ করেন, তাকে মাঝে মাঝে দূরে কোথাও বেড়াতে নিয়ে যান, হারিয়ে যান কোনো অজানা প্রান্তে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদেরকে অনেক সফরে নিয়ে যেতেন।
৬/আপনার পরিবারের কে কি রকম তা আপনি আপনার স্ত্রীকে আগেই জানিয়ে দিন। তাকে সবার স্বভাব চরিত্র সম্পর্কে ধারণা দিলে সে অনুযায়ী তাদের সাথে মিলে মিশে চলতে সহজ হবে। মাঝে মধ্যে আপনি তাকে বিভিন্ন ভালো উপদেশ দিন, তাকে আপনার বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে বুঝান। এতে সে আপনাকে আরো বেশী ভালোবাসবে।
৭/আপনি তখনই একজন প্রিয় স্বামী হবেন যখন আপনার স্ত্রীকে সন্তানদের লালন পালনের কাজে সহযোগিতা করবেন। আপনি সারা রাত নাক ডেকে ঘুমাবেন আর আপনার স্ত্রী একটু পর পর বাচ্চার ভিজা কাপড় পাল্টাবে, এভাবে হলে আপনার স্ত্রী আপনাকে একজন স্বার্থপর ভাববেন। আপনিও তার কাজে যতটুকু পারেন সহযোগিতা করুন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাচ্চাদেরকে খুব ভালোবাসতেন।
৮/ আপনার স্ত্রীকে পর্দায় রাখুন,
পর্দা করার অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য করা। কেননা তাঁদের আনুগত্য প্রতিটি নর-নারীর উপর ফরয করা হয়েছে। তাই একজন আদর্শ স্বামী হিসেবে আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো স্ত্রীকে পর্দায় রাখা। আপনি নিজে ও পর্দা করুন।
আল্লাহ পাক বলেন ঃ
হে মুমিনগণ, তোমাদের জন্য হালাল নয় যে, তোমরা জোর করে নারীদের ওয়ারিছ হবে। আর তোমরা তাদেরকে আবদ্ধ করে রেখো না, তাদেরকে যা দিয়েছ তা থেকে তোমরা কিছু নিয়ে নেওয়ার জন্য, তবে যদি তারা প্রকাশ্য অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়। আর তোমরা তাদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস কর। আর যদি তোমরা তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে এমনও হতে পারে যে, তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ তাতে অনেক কল্যাণ রাখবেন”।
[সূরা আন-নিসা: ১৯]
সুতরাং প্রত্যেক পুরুষের উপর অবশ্য কর্তব্য হচ্ছে স্ত্রীর অধিকারসমূহ যথাযথভাবে আদায় করা। অবশ্য এই অধিকার প্রদানের পরও নারীদের থেকে কোনো কোনো সময় বক্রতা লক্ষ্য করা যায়। কোনো অবস্থাতেই তাদেরকে পুরাপুরিভাবে বশে আনা সম্ভব নয়।