মিজানুর রহমান মিজান, ডেইলি টেকনাফ ::
গত কয়েকদিন ধরে সারাদেশে পেয়াজ সংকটে ভোক্তারা পড়েছে চরম বিপাকে । প্রথম কয়েকদিন ৭০টাকা কেজী বিক্রি করলেও বিশেষ করে গত ২/৩ দিনে এক লাফে ১০০টাকায় উঠে গেছে প্রতি কেজী পেয়াজ । জানা যায় ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি বন্ধের পর থেকে এবং কিছু অসাধু আড়ৎদারেরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধ পেয়াজের মজুদ রাখার কারনে এ সংকট দেখা দেয়,
(টেকনাফ স্থল বন্দর পরিদর্শন করছেন সাবেক এমপি বদি ও শাহীন আক্তার বদি এমপি)
পরে মিয়ানমার পেয়াজ দিতে রাজি হলে বিপূল পরিমান পেয়াজ আসে টেকনাফ স্থল বন্ধরে । একই দিন বুধবার(০২অক্টোবর২০১৯) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত একদিনে টেকনাফ স্থল বন্দরে মিয়ানমার থেকে ৫৮৪মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানী হয়েছে।
চলমান সংকট নিরসনে পেঁয়াজ আমদানি ও বাজার নিয়ন্ত্রনের লক্ষ্যে টেকনাফ স্থল বন্দর পরিদর্শন করেছেন বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দল ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসক। এর আগে একই দিনে টেকনাফ স্থল বন্ধর পরিদর্শন করেন কক্সবাজার-৪ উখিয়া -টেকনাফ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার বদি ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদি । এসময় ব্ন্দরের অভ্যন্তরে গিয়ে আমদানিকৃত পেয়াজ দেখেন এবং পেয়াজের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে এনে জনদূর্ভোগ কমানোর লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট বন্দর কতৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন শাহীন আক্তার বদি ও সাবেক এমপি বদি।
বিশেষ সুত্রে জানা যায় পরিদর্শনে আগত প্রতিনিধি দল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বুধবার বিকেল ৫ টার দিকে বাণিজ্য মন্ত্রালয়ের (বস্ত্রসেল)এর যুগ্ন সচিব তৌফিকুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল টেকনাফ স্থল বন্দরে আমদানিকারকদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। এসময় জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (জেনারেল) মাসুদুর রহমান মোল্লা, টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল হাসান, কক্সবাজার চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা, স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা আবছার উদ্দিন, স্থল বন্দরের সহকারি ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন, স্থল বন্দরের সিএন্ডএফ এসোসিয়েশন সাধারন সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাসেম, যদু চদ্র দাস, এম আফছার সোহেল উপস্থিত ছিলেন। এর আগে দুপুরে উখিয়া-টেকনাফের সাংসদ সদস্য শাহিন আক্তার ও সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদি এবং জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন টেকনাফ স্থল বন্দর ঘুরে দেখেন।
এদিকে একই দিন বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত টেকনাফ স্থল বন্দরে মিয়ানমার থেকে ৫৮৪মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানী হয়েছে। এছাড়া শ্রমিকের অভাবে খালাসের অপেক্ষায় নাফনদে ভাসছে ২১ হাজার ৭৫ বস্তার (৮৪৩ মেট্রিক টন) বস্তার কয়েকটি পেয়াজের ট্রলার। সেপ্টেম্বর মাসে এপর্যন্ত মিয়ানমার থেকে ৪৭২৬ মেট্রিক টন মতো পেয়াঁজ আমদানী হয়েছে বলে বন্দর সূত্রে জানা গেছে।
বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব তৌফিকুর রহমান বলেন, দেশের চাহিদা ও পেয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখতে এখানে আসা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা পেয়াজের মুল্যে নিয়ে কারসাজি করে কৃত্রিম সংকটে অপচেষ্টা চালায় তাদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা আবছার উদ্দিন বলেন, টেকনাফ স্থল বন্দর দিয়ে ৫৮৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ ভর্তি ৩৭টি ট্রাক দেশের বিভিন্ন এলাকা রওয়ানা দিয়েছে। এছাড়া মিয়ানমার থেকে আসা ৮৪৩ মেট্রিক টন পেয়াজ খালাসের অপক্ষোয় রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ‘বাজার দাম সহনশীল রাখতে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি নির্বিঘœ রাখতে হবে। পাশাপাশি স্থানীয়দেরও সুলভ মুল্যে পেয়াজ সরবারহ করতে হবে। ইতি মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন কক্সবাজারে ৬৫-৭০ টাকায় কেজি পেয়াজের খুচরা বিক্রয় মুল্যে নির্ধারন করে দিয়েছে।
উল্লেখ্য পেয়াজের প্রচুর পরিমানে মজুদ রয়েছে তাই মিয়ানমারের আমদানিকৃত পেয়াজ স্থানীয় বাজারে সর্বোচ্চ ৫০ টাকায় বিক্রি করার জন্য সম্মিলিতভাবে সংশ্লিষ্ট সকলে পরামর্শ দেন বানিজ্যমন্ত্রনালয়ের পরিদর্শকগন।