ডেইলি টেকনাফ রিপোর্টঃ-
সমুদ্রপথে আকস্মিক রোহিঙ্গাদের আগমন, মালয়েশিয়া উপকূল থেকে প্রায় ৭শ’ রোহিঙ্গা বোঝাই দুটি ট্রলারের প্রবেশের আশঙ্কা এবং গত শুক্রবার মিয়ানমারে জেলমুক্ত হওয়া সহস্রাধিক রোহিঙ্গা ধেয়ে আসতে পারে শঙ্কা নিয়ে টেকনাফের উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত সকল সংস্থা এবং স্থানীয় জনগণকে সতর্ক করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম সাইফ । এ বিষয়ে তিনি উপজেলার বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
এর ধারাবাহিকতায় ৪ নং সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন শাহপরীরদ্বীপ তথা ইউনিয়নের উপকূলে যে কোন ধরনের রোহিঙ্গা বোঝাই ইঞ্জিনবোট বা ট্রলার দেখামাত্র প্রশাসনকে খবর দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, করোনা ক্রান্তিকালীন রোহিঙ্গা বোঝাই কোন ট্রলার বা নৌকা আপনাদের এলাকায় যাতে প্রবেশ করতে না পারে, প্রবেশ করার কোন খবর পেলে সে বিষয়ে দ্রুত প্রশাসন কে খবর দিন এবং সরকারি সিদ্ধান্ত জানুন। কোনোভাবেই আপনারা অতি উৎসাহিত হয়ে তাদের উদ্ধার কাজে প্রশাসনের অনুমতি এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষা ব্যতীত অংশগ্রহণ করবেন না। সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য/সদস্যাবৃন্দ গ্রাম-পুলিশগণ বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন। এটা আমাদের সকলের শারীরিক নিরাপত্তার জন্য অনুরোধ করছি। কারণ, সে সকল রোহিঙ্গাদের মধ্যে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী থাকার আশংকা রয়েছে এবং যা ছড়িয়ে পড়তে পারে। নিজের সুরক্ষার বিষয় সবার আগে ভাবুন। ভাল থাকুন। নিরাপদ থাকুন। আমরা আছি আপনাদের পাশে আছি।
এদিকে, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের গণক্ষমা করার আওতায় প্রায় ২৫ হাজার বন্দী জেলমুক্ত হয়েছে তন্মধ্যে সহস্রাধিক রোহিঙ্গা রয়েছে। গত শুক্রবার এরা মুক্তি পেয়েছে। মুক্তিপ্রাপ্ত এসব রোহিঙ্গার অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ইতিপূর্বে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় শিবিরে অবস্থান নিয়েছে। গুঞ্জন উঠেছে, আশ্রিতদের পক্ষে জেলমুক্তদের এদেশে চলে আসার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ফলে জেলমুক্ত রোহিঙ্গাদের অনেকের এদেশে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে, মালয়েশিয়ার লংকাউইদ্বীপের উপকূলে প্রায় ৭শ’ রোহিঙ্গা বোঝাই যে দুটি ট্রলার ভাসমান রয়েছে সেগুলোকে পুশব্যাক করা হলে এদের গন্তব্য হতে পারে বাংলাদেশের টেকনাফ উপকূল। এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশ নাকি মিয়ানমার থেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে গমন করেছে তা এখনও অজানা। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, এসব রোহিঙ্গারা মালয়েশিয়ার আগে থাইল্যান্ডে নামার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে।
টেকনাফের আশ্রয় শিবিরে থাকা রোহিঙ্গা সূত্রগুলো জানিয়েছে, যে সহস্রাধিক রোহিঙ্গা মিয়ানমারে জেলমুক্ত হয়েছে এদের এদেশে চলে আসার সম্ভাবনা বেশি। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য রয়েছে। মূলত বিশ্বের যেসব সাহায্য সংস্থা রোহিঙ্গা ইস্যুতে কাজ করছে এদের অনেকেই বিভিন্ন কারণে মিয়ানমারের এ ক্ষদ্র জনগোষ্ঠীর সদস্যদের বাংলাদেশে আশ্রয় দানের পক্ষে। এ প্রক্রিয়ায় তাদের আসল উদ্দেশ্য কি তা অজ্ঞাত। গত বুধবার যে ৩৯৬ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পুশব্যাক হয়ে এসেছে এদেরকে গ্রহণের জন্য এ জাতীয় সংস্থার চাপ ছিল বলেও চাউর হয়েছে।