শীত যেন যায় যায়, ফাল্গুনের আগমনী বার্তা জানান দিচ্ছে,আমের মুকূলে ভরে গেছে চারিদিক,মৃদু উঞ্চতা পরিবেশজুড়ে।এরই মাঝে দেশের সর্ব দক্ষিনে অবস্থিত সাগরের গর্জন, নদীর কলতান আর নেট্যং পাহাড়ের ঝর্ণা সমৃদ্ধ পর্যটন নগরী টেকনাফ মডেল থানার বাগানে বাহারী রঙের ফুলে ফুলে যেন হাসছে যেন অনন্যা।থানা চত্বরের যে দিকেই তাকাই সে দিকেই বিচিত্র সব ফুলের সমারোহ। ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা থানা চত্বর, যা এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। এছাড়া থানার গেট দিয়ে সামনে তাকালেই চোখে পড়ে আধুনিক দৃষ্টিনন্দন মসজিদ।ডান পাশে ঐতিহাসিক মাতিনের কূপ যেন টেকনাফ থানার ইতিহাসে প্রেমের স্বাক্ষর বহন করে চলেছে।পূর্ব পার্শ্বে ফাস্টফুড কেন্টিন দর্শনার্থীদের বিনোদনে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।পশ্চিমে মডেল থানা কার্যালয় ভবন।
ফুলের সুরভিত সুন্দর এ বাগানের মধ্যখানে বসানো হয়েছে টিফিন ট্যাবল ও ছাতা যা বাগানের সুন্দর্য্যকে আরও বাড়িয়ে তূলেছে।পুরো টেকনাফ মডেল থানা অঞ্চল স্থানিয় ও দেশের সকল মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া আছে।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ প্রদীপ কুমার দাশের নিজস্ব উদ্যোগে থানা চত্বরের বিভিন্ন স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুলের বাগান। এই বাগানে ফুটেছে নানান প্রকৃতির ফুল। তার মধ্যে গাঁদা, ডালিয়া, জিনিয়া, গোলাপ, জবা, রেডবল, পয়েনচেটিয়া, রঙ্গন, ছেলেসিয়া ও পাতাবাহারসহ নানা জাতের ফুল। এছাড়া লাগানো হয়েছে চায়না লেবু, পেঁপে, কদবেল, পেঁয়ারা, বাতাবি লেবু, কাগজি লেবু, কাঁঠাল, মিষ্টি আমড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের চারা।
২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন। তারপর থেকেই তিনি নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল, ফল গাছ লাগিয়ে থানা প্রাঙ্গণের পরিবেশটা সাজিয়ে রাখেন। আর প্রতিদিন থানা অঞ্চলে ঘুরতে আশা দর্শনার্থীরা একপলক হলেও ফুলের বাগান দেখতে যায় থানা প্রাঙ্গণে।
স্থানীয়রা বলে
সকলে বলে এটা থানা। মানুষ এই জায়গায় ঠুকতে ভয় পায়। মানুষ মনে করত পুলিশের কোনো মন নেই। কিন্তু থানার ভেতরে এত সুন্দর একটা ফুলের বাগান তৈরি করে পুরো থানা প্রাঙ্গণকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে টেকনাফের মানুষের মনে জমা এই ধারণাটি পরিবর্তন করে দিয়েছে আমাদের ওসি স্যার। তিনি প্রমাণ করেছেন পুলিশও সাধারণ মানুষের মতো। তারাও চায় সকলের মতো সুন্দর পরিবেশে বসবাস করতে। আমাদের অনেক ভালো লেগেছে ওসি স্যারের এমন মহৎ উদ্যো
টেকনাফ মডেল থানায় অবস্থিত ঐতিহাসিক মাতিনের কূপ পরিদর্শনে আসা কয়েকজন দর্শনার্থীরা জানান, টেকনাফে ঘুরতে এসে এত সুন্দরভাবে সাজানো একটি থানা দেখতে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।টেকনাফ মডেল থানায় একদিন
টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন- আমি এখানে দায়িত্ব নেয়ার পর দেখলাম মাতিনের কূপটি আরও দর্শকনন্দিত করা যাবে যদি পরিকল্পিতভাবে একটি বাগান করা হয়। এখানে আসার পর থানা অঞ্চলের চারিদিকে এমন একটি পরিবেশ দেখে চিন্তা করলাম।পরে সকলের পরামর্শ ও সহযোগিতায় সুন্দর্য্যবর্ধনের এতটুকু সফল হতে সক্ষম হয়েছি।এই মনোরম জায়গাটি দেখতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দর্শনার্থীরা আসে। আর সেই ঐতিহাসিক মাতিনের কুপে ঢুকতেই বাগানটি সকলের চোখে পরে। এমন একটি ঐতিহাসিক জায়গায় অবস্থিত থানাটি যদি অপরিষ্কার থাকে তাহলে টেকনাফের বদনাম হবে।
তিনি আরও বলেন, মুজিববর্ষে টেকনাফ মডেল থানার ঐতিহাসিক মাতিনের কূপের সম্মান ও পুলিশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে পুলিশ সুপার স্যারের অনুপ্রেরণায় ও আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে থানা প্রাঙ্গণ আরও সাজানো হবে। এমন একটি সুন্দর উদ্যোগ গ্রহণ করতে পেরে আমি নিজেও আনন্দিত।লেখক:মিজানুর রহমান মিজান
(সংগীত শিল্পী ও লেখক)