প্রশাসনের কড়াকড়ি আরোপ করার কারনে সীমান্তের চিহ্নিত ইয়াবা সিন্ডিকেট এবার কৌশল পাল্টিয়েছে। এসব সিন্ডিকেটের ভাড়াটিয়া রোহিঙ্গারা প্রতিদিন সন্ধ্যায় টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্তের বালুখালী, রহমতের বিল, আঞ্জিমানপাড়া,ধামনখালী পয়েন্ট দিয়ে কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী তাজনিমারখোলা এবং সাবরাং নয়া পাড়া,শাহ্পরীর দ্বীপ,কাটা বনিয়া, হ্নীলার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে এবং মুছনী লেদার কয়েকটি পয়েন্টে, পালংখালী শফিউল্লাহকাটায় হয়ে জেলে সিজে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সহযোগিতাই মিয়ানমারের নাফনদীতে মাছ ধরার ভান করে ওপারে গিয়ে নিয়ে আসছে ইয়াবা। সোমবার সকালে সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
সীমান্তের বসবাসকারী লোকজনের সাথে কথা বলে জানাগেছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মাঝখানে রয়েছে নাফনদী। এই নাফনদীতে মাছ শিকারের জন্য প্রতিনিয়ত বেশ কিছু রোহিঙ্গারা সন্ধ্যার দিকে জাল নিয়ে সীমান্তে গিয়ে থাকে। তাদের সাথে জেলে সেজে ইয়াবা বহনকারী রোহিঙ্গারা সীমান্তের ওপারে গিয়ে রাতে নিয়ে আসছে ইয়াবার চালান। কিছু উঠতি সাহসী রুহিঙ্গা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গতিবিধী নজরে রেখে শরীরে খালি টাংকি বেধে নদীর মাঝখান পর্যন্ত যায় অপরদিকে তাদের লোক ঠিক একই ভাবে ইয়াবা শরীরে বেধে নদীর মাঝ সিমানায় এসে মিলিত হয়ে সাতার কেঠে নিয়ে আসছে লক্ষ লক্ষ মরন নেশা ইয়াবা।গত রাত 14ই মে রাত অনুমানিক নয়টার দিকে সাবরাং আছারবনিয়ার ফজলের ছেলে ও তার সঙ্গীসহ পন্ঞ্চাশ হাজার পিস ইয়াবা সহ ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেন ও মাদক নির্মূল কমিটির সদস্যরা হাতে নাতে ধরে পুলিশকে সোপর্দ করে।এ ঘঠনায় এই ইয়াবার মালিক কে তা নিয়ে জনমনে কৌতুলের সৃষ্টি হয়েছে।এত কড়া অভিযানের মধ্যেও কিভাবে অবাধে ইয়াবা আসছে তা খতিয়ে দেখতে উৎসুক এলাকাবাসীর দাবী।টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় মাদক নির্মূল সভা সমাবেশ প্রচারনা চালিয়ে জনগনকে অনুরুধ জানান এবং গত কয়দিন আগে রুহিঙ্গা লোকালয়ে মাদক নির্মূল সভা করে রুহিঙ্গাদের কে সতর্ক করেন এবং বিনীতভাবে অনুরুধ জানালেও কে শুনে কার কথা,তারা এসবের পাত্তা না দিয়ে সমান তালে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক পাচার,স্বর্ণ পাচার,নারী পাচার,দেহ ব্যাবসা সহ নানা অনৈতিক কাজ।এলাকার সব ধরনের অপরাধ বের করতে পুলিশ মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করছে। ইতিমধ্যে সীমান্ত দিয়ে এপারে নিয়ে আসার সময় কয়েকটি চালান প্রশাসনের হাতে আটক হলেও বেশির ভাগ চলে গেছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
বালুখালী এলাকার এক আওয়ামীলীগ নেতা (নাম প্রকাশ না করার শর্তে) জানান, প্রতিদিন বিকেল ৪টা দিকে বালুখালী বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমারে যায় ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। তারা রাতের বেলায় ইয়াবা চালান নিয়ে আবার ফিরে আসে। তিনি বলেন, কৌশল পাল্টিয়ে রোহিঙ্গারা জেলে সেজে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা নিয়ে আসছে বলে সে অভিযোগ করেন।
এদিকে সম্প্রতি উখিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বালুখালী এলাকা থেকে আটক করেন সাড়ে ৩লাখ ইয়াবা। এই চালানটি মিয়ানমার থেকে রাতের বেলায় নিয়ে আসছিল কিছু স্থানীয় ও রোহিঙ্গারা। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলাও হয়েছে। এ মামলায় বালুখালী কাস্টমস এলাকার বুজুরুজ মিয়া নামের এক ইয়াবা গডফাদারকে আটক করে জেলে পাঠিয়ে পুলিশ। এছাড়া আরো বেশ কয়েকজনকে আসামী করা হয়েছে বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে।
পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গারা বেপরোয়া চলাচল করার কারনে ইয়াবা, মাদক ও অপরাধ কর্মকান্ড বন্ধ হচ্ছেনা। তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা না হলে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে আমরা যারা স্থানীয় রয়েছি তাদেরকে বড় ধরনের মাশুল দিতে হবে বলে জানিয়েছেন।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রতিনিয়ত ইয়াবা ও মাদক উদ্ধার করছে পুলিশ। এছাড়াও চিহ্নিত ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।সাংবাদিক ও পুলিশ এক সাথে কাজ করলে সমাজ থেকে মাদক অনেকাংশে নির্মূল হবে বলে মন্তব্য করেন সচেতন ও সুশীল সমাজ।